১) সন্ধি ও সমাসের একটি মিল উল্লেখ করো।
উত্তরঃ সন্ধি ও সমাস, দুই ক্ষেত্রেই নতুন শব্দ গঠিত হয়।
২) সমাস প্রক্রিয়ায় আমরা যে পদ লাভ করি তাকে কি বলে?
উত্তরঃ সমস্যমান পদ।
৩) সহযোগী কর্তা কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ একাধিক কর্তা পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে একই ক্রিয়া সম্পন্ন করলে তাদের বলে সহযোগী কর্তা। যেমন- ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করছে।
৪) দ্বিকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে?
উত্তরঃ যে ক্রিয়ার দুটি কর্ম থাকে তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন: শিক্ষক ছাত্রদের বাংলা ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন।
৫)সম্বোধন পদ কাকে বলে?
উত্তরঃ বাক্যের প্রথমে, বাক্যের মাঝে, বা বাক্যের শেষে বাক্যের গতি ভঙ্গ করে, কাউকে ডাকা বা সম্বোধন করা হলে, যে পদটির দ্বারা এই সম্বোধন করা হয়, তাকে সম্বোধন পদ বলে। যেমন- বাবু, পড়তে বস।
এখানে ‘বাবু’ সম্বোধন পদ।
৬) শূন্য বিভক্তি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ যে বিভক্তি পদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শব্দকে পদে পরিণত করে কিন্তু নিজে অপ্রকাশিত অবস্থায় থাকে এবং মূল শব্দটির কোন পরিবর্তন ঘটায় না তাকে শূন্য বিভক্তি বলে। যেমন – শ্যামল মাঠে কাজ করে।
৭)নিত্য সমাস কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সমাসের ব্যাসবাক্য হয় না, কিংবা ব্যাসবাক্য করতে গেলে অন্য পদের সাহায্য নিতে হয়, তাকে নিত্য সমাস বলে। যেমন: অন্য দেশ = দেশান্তর, এখানে ‘অন্য দেশ’ আর ‘দেশান্তর’, এই বাক্যাংশ ও শব্দটির মধ্যে তেমন বিশেষ কোন পার্থক্য নেই।কেবল ‘অন্য’ পদের বদলে ‘অন্তর’ পদটি ব্যবহার করা হয়েছে। তাই এটি নিত্য সমাস।
৮) প্রযোজক কর্তা কাকে বলে?
উত্তরঃ মূল কর্তা যখন অন্যকে কোনো কাজে নিয়োজিত করে তা সম্পন্ন করায়, তখন তাকে প্রযোজক কর্তা বলে।
যেমন- যেমন- বাবা ছেলেকে গল্প শোনাচ্ছেন। এখানে ‘বাবা’ প্রযোজক কর্তা।
৯) সমধাতুজ কর্ম কারক?
উত্তরঃ ক্রিয়াটি যে ধাতু থেকে নিষ্পন্ন হয়েছে কর্মটিও যদি সেই ধাতু থেকে নিষ্পন্ন হয়, তবে সেই কর্মকে সমধাতুজ কর্ম বলে।
উদাহরণ- আমি কি ঘুমটাই না ঘুমিয়েছি। কর্ম ‘ঘুম’এবং ক্রিয়া ‘ঘুমিয়েছি ‘ একই ধাতু থেকে উৎপন্ন হয়েছে। তাই ‘ঘুম ‘ হল সমধাতুজ কর্ম।
১০) নির্দেশক বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ নির্দেশক হল এক ধরনের ধ্বনিগুচ্ছ, যেগুলির স্বাধীন কোনো অর্থ নেই, কিন্তু শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে বচন নির্দেশ করে।
টি, টা, খান, খানি, খানা, গুলি, গুলো প্রভৃতি হল নির্দেশকের উদাহরণ।
১১) বিভক্তি ও অনুসর্গের দু’টি পার্থক্য লেখ?
উত্তরঃবিভক্তি ও অনুসর্গের প্রধান দু’টি পার্থক্য হল:
১। অনুসর্গের স্বাধীন অর্থ ও স্বাধীন ব্যবহার আছে, বিভক্তির স্বাধীন অর্থ ও স্বাধীন ব্যবহার নেই।
২। বিভক্তি কোনো পদ নয়। অনুসর্গ নিজে এক ধরনের অব্যয় পদ।
১২) সম্বোধন পদকে কারকে বলা যায় না কেন?
উত্তরঃসম্বন্ধ পদের সঙ্গে ক্রিয়াপদের সরাসরি সম্পর্ক থাকে না, অন্য পদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকে। তাই সম্বন্ধ পদকে কারক বলা যায় না।
১৩) কোন সমাসে উভয়পদের অর্থই প্রাধান্য পায়?
উত্তরঃ দ্বন্দ্ব সমাসে।
১৪) দ্বন্দ্ব সমাসের অর্থ কি?
উত্তরঃ দ্বন্দ্ব কথাটির আভিধানিক অর্থ মিলন, প্রচলিত অর্থ কলহ বা বিবাদ এবং ব্যকরণসন্মত অর্থ হল যুগ্ম বা জোড়া।
১৫) সন্ধি ও সমাসের একটি পার্থক্য লেখ।
উত্তরঃদুটি ধ্বনি বা বর্ণের মিলনে হয় সন্ধি কিন্তু পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুই বা ততধিক পদের মিলনের হয় সমাস।
১৬) তির্যক বিভক্তি কাকে বলে?
উত্তরঃযে বিভক্তি একাধিক কারকে ব্যবহৃত হয়, তাকেই তির্যক বিভক্তি বলে।যেমন- ‘এ’ বিভক্তি।
১৭) অকারক কয় প্রকার ও কি কি?
উত্তরঃ দুই প্রকার। সম্বন্ধ পদ এবং সম্বোধন পদ।
১৮) উপমিত ও উপমান কর্মধারয় সমাসের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ।
উত্তরঃ১। উপমান কর্মধারয় সমাসে উপমানই প্রধান, উপমেয় ঊহ্য থাকে।অন্যদিকে উপমিত কর্মধারয় সমাসে উপমেয়ই প্রধান এবং উপমান ও উপমেয় ভেদের আভাস থাকে।
২। ‘বিশেষ্য + বিশেষণ’ দ্বারা গঠিত হয় উপমান কর্মধারয়। অন্যদিকে ‘বিশেষ্য + বিশেষ্য’ দ্বারা গঠিত হয় উপমিত কর্মধারয়।
১৯) অনুসর্গের অপর নাম কি?
উত্তরঃ পরসর্গ
২০) করণে বীপ্সার সংজ্ঞাসহ উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ বাক্যের করণ কারকটি যদি পর পর দু বার ব্যবহৃত হয়, তবে তাকে করণের বীপ্সা বলা হয়। (বীপ্সা কথাটির অর্থ হল পৌনঃপুনিকতা বা পুনরুক্তি।)
যেমন- ভয়ে ভয়ে রাতটা কেটে গেল। এখানে ‘ভয়ে ভয়ে’ হল করণে বীপ্সার উদাহরণ।
২১) বিভক্তি ও নির্দেশক এর দুটি পার্থক্য লেখ।
উত্তরঃ১। বিভক্তি শব্দ বা ধাতুর পরে যুক্ত হয়ে তাকে পদে পরিণত করে। অন্যদিকে, নির্দেশক শব্দের পরে যুক্ত হয়ে বচন নির্দেশ করে।
২। বিভক্তির পরিবর্তে অনুসর্গ ব্যবহৃত হতে পারে। অন্যদিকে, নির্দেশকের পরিবর্তে অন্য কিছু ব্যবহৃত হতে পারে না।
২২) অলোপ সমাস কি?
উত্তরঃ যে সমাসে সমস্যমান পদের বিভক্তি সমস্তপদে লোপ পায় না, তাকে অলোপ সমাস বলে। যেমন – হাতে ও পায়ে = হাতে-পায়ে।
২৩) অনুসর্গ কয় প্রকার ও কি কি?
উত্তরঃ দুই প্রকার। নাম অনুসর্গ ও ক্রিয়া অনুসর্গ।
২৪) অলোপ সমাস কয় প্রকার ও কি কি?
উত্তরঃ অলোপ সমাস তিন প্রকার। অলোপ দ্বন্দ্ব, অলোপ ততৎপুরুষ এবং অলোপ বহুব্রীহি।
২৫) ‘ব্যাসবাক্য’ শব্দে ‘ব্যাস’ এর অর্থ কি?
উত্তরঃ ব্যাখ্যা।
২৬) বহুব্রীহি কথাটির অর্থ কি?
উত্তরঃ বহু কথাটির অর্থ প্রচুর এবং ব্রীহি কথাটির অর্থ ধান। তাই বহুব্রীহি কথাটির অর্থ হল যার প্রচুর ধান আছে এমন লোক।
২৭) নির্দেশক বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ নির্দেশক হল এক ধরনের ধ্বনিগুচ্ছ, যেগুলির স্বাধীন কোনো অর্থ নেই, কিন্তু শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে বচন নির্দেশ করে। যেমন – টি, টা, খান, খানি, খানা, গুলি, গুলো প্রভৃতি হল নির্দেশকের উদাহরণ।
২৮) নিরপেক্ষ কর্তা কাকে বলে?
উত্তরঃ একই বাক্যে সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা আলাদা হলে, অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তাটিকে নিরপেক্ষ কর্তা বলে। যেমন – বাতাস বইলে ঘুড়ি উড়বে। এখানে ‘বাতাস’ নিরপেক্ষ কর্তা।
২৯) সমস্ত পদ এর অন্য নাম কি?
উত্তরঃ সমাসবদ্ধ পদ বা সমাসনিষ্পন্ন পদ।
৩০) কোন সমাসে কৃদন্ত পদের অর্থ প্রাধান্য পায়?
উত্তরঃ উপপদ তৎপুরুষ সমাস।
৩১) ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাস কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বহুব্রীহি সমাসে পরপদে পূর্বপদের ক্রিয়ার পুনরুক্তির মাধ্যমে ক্রিয়ার পারস্পরিকতা বোঝানো হয়, তাকে ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন- চুলে চুলে যে লড়াই = চুলোচুলি।
৩২) যার জন্য কর্তা ক্রিয়া সম্পন্ন করে, তাকে কি বলে?
উত্তরঃ প্রযোজক কর্তা
৩৩) উপপদ তৎপুরুষ সমাস কাকে বলে?
উত্তরঃ উপপদের সাথে কৃদন্ত পদের (কৃৎ প্রত্যয়ান্ত পদ) যে সমাস হয় তাকে উপপদ তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন- বেতন ভোগ করে যে- বেতনভোগী।
৩৪) অক্ষুন্ন কর্ম কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ দ্বিকর্মক ক্রিয়ার ক্ষেত্রে বাচ্য পরিবর্তনের পরেও যে কর্মটি অপরিবর্তিত বা অক্ষুণ্ন থাকে, তাকে অক্ষুণ্ন কর্ম বলে। যেমন:
কর্তৃবাচ্য: আমি রামকে উপহারটি দিলাম। কর্মবাচ্য: রাম আমার দ্বারা উপহারটি প্রদত্ত হল। এখানে ‘উপহারটি’ অক্ষুণ্ণ কর্ম।
৩৫) নির্দেশক এর মূল বৈশিষ্ট্য কি?
উত্তরঃ নির্দেশক বস্তু বা ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট করার পাশাপাশি তার সংখ্যাও নির্দেশ করে।
৩৬) অ-বিভক্তির অপর নাম কি? কেন এই নাম?
উত্তরঃ অ- বিভক্তির অপর নাম হল শূন্য বিভক্তি। কারণ এই বিভক্তি অপ্রকাশিত থাকে, এর কোনো চিহ্ন বা বাহ্যিক রূপ নেই।
৩৭) কোন সমাসের ব্যাসবাক্য হয় না?
উত্তরঃ নিত্য সমাস।
৩৮) সমাস শব্দের অর্থ কি?
উত্তরঃ সমাস শব্দের অর্থ হল সংক্ষেপ।
৩৯) কারক কাকে বলে?
উত্তরঃ বাক্যের মধ্যে ক্রিয়াপদের সাথে নামপদের সম্পর্ককে কারক বলে।
৪০) নিত্য সমাস কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সমাসের ব্যাসবাক্য হয় না, কিংবা ব্যাসবাক্য করতে গেলে অন্য পদের সাহায্য নিতে হয়, তাকে নিত্য সমাস বলে। যেমন: অন্য দেশ = দেশান্তর
৪১) প্রযোজ্য কর্তা কাকে বলে?
উত্তরঃ মূল কর্তা যাকে দিয়ে ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে প্রযোজ্য কর্তা বলে।
যেমন- পিতা পুত্রকে গল্প শোনাচ্ছেন। এখানে ‘পুত্র’ হল প্রযোজ্য কর্তা।
৪২) কোন সমাসে সমস্যমান পদ গুলি দ্বারা ব্যাস বাক্য রচনা সম্ভব নয়?
উত্তরঃ নিত্য সমাস।
৪৩) মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস ও মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি সমাসের পার্থক্য লেখ।
উত্তরঃ মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাসে ব্যাসবাক্যের মধ্যস্থিত ব্যাখ্যানমূলক পদের লোপ পায়। মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি সমাসে ব্যাসবাক্যে আগত পদের লোপ পায়।
৪৪) ধাতু বিভক্তির অপর নাম কি?
উত্তরঃ ক্রিয়া বিভক্তি।
৪৫) পূর্বপদ সংখ্যাবাচক হয় কোন সমাসে?
উত্তরঃ দ্বিগু সমাস।
৪৬) পূর্বপদ ও পরপদ এর মধ্যে অভেদ কল্পনা করা হয় কোন সমাসে?
উত্তরঃ কর্মধারয় সমাসে।
৪৭) অনুসর্গ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ যে অব্যয়গুলি বিশেষ্য বা সর্বনামপদের পরে বসে বিভক্তির কাজ করে, সেই অব্যয়গুলিকে অনুসর্গ বলে। যথা : থেকে, হইতে/হতে, অপেক্ষা, চেয়ে, দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক ইত্যাদি।
৪৮) সমস্যমান পদ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে যে পদ মিলে সমাস হয়, তাদের প্রত্যেকটিকে সমস্যমান পদ বলে। যেমন – বাবা ও মা = বাবা-মা, এখানে ‘বাবা’ ও ‘মা’ এই দুটি পদ হল সমস্যমান পদ।
৪৯) অপাদান কারকে ব্যবহৃত হয় এমন দুটি অনুসর্গের নাম লেখ।
উত্তরঃ হইতে, থেকে।
৫০) কোন সমাসে পরপদের অর্থ প্রাধান্য পায়?
উত্তরঃ কর্মধারয় সমাস।
৫১) বিভক্তি কাকে বলে?
উত্তরঃ যেসব বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি শব্দের শেষে যুক্ত হয়ে ঐ শব্দটিকে বাক্যে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলে, সেসব বর্ণ বা বর্ণসমষ্টিকে বিভক্তি বলে। যেমন- নদীতে মাছ আছে। এখানে ‘তে’ হল বিভক্তি।
৫২) বিভক্তি প্রধান কারক কোনগুলি?
উত্তরঃ কর্তৃৃকারক, কর্ম কারক ও অধিকরণ কারক।
৫৩) বাক্যাশ্রয়ী সমাস কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সমাসে একটি বাক্যাংশকে বিশেষ্য বা বিশেষণ হিসাবে প্রয়োগ করা হয়, তাকে বাক্যাশ্রয়ী সমাস বলে। যেমন- সবুজকে বাঁচাও, তার নিমিত্তে কমিটি= সবুজ বাঁচাও কমিটি।
৫৪) ‘একশেষ দ্বন্দ্ব’ এর বৈশিষ্ট্য কি?
উত্তরঃ ১।সমস্তপদে একটিই সমস্যমান পদ অবশিষ্ট থাকে, অন্য পদগুলি লোপ পায়।
২। অবশিষ্ট পদটির বহুবচনের রূপের দ্বারা সমস্তপদ গঠিত হয়।
যেমন- আমি,তুমি ও সে = আমরা
৫৫) ব্যাসবাক্যের অপর নাম কি?
উত্তরঃ বিগ্রহ বাক্য।