দূরে দূরে গ্রাম দশ বারোখানি , মাঝে একখানি হাট
সন্ধ্যায় সেথা জ্বলে না প্রদীপ, প্রভাতে পড়ে না ঝাঁট।
বেচাকেনা সেরে বিকেলবেলায়
যে যার ঘরে ঘরে ফিরে যায়;
বকের পাখায় আলোক লুকায় ছাড়িয়া পূবের মাঠ ;
দূরে দূরে গ্রামে জ্বলে উঠে দ্বীপ …আঁধারেতে থাকে হাট।
নিশা নামে দূরে শ্রেণীহারা এক ক্লান্ত কাকের পাখে ;
নদীর বাতাস ছাড়ে নিঃস্বাস পার্শ্বে পাকুড়-শাখে
হাটের দোচালা মুদিল নয়ান
কারো তরে তার নাই আহ্বান;
বাজে বায়ু আসি বিদ্রুপ বাঁশি জীর্ণ বাঁশের ফাঁকে
নির্জন হাটে রাত্রি নামিল একক কাকের ডাকে।
দিবসেতে সেথা কত কোলাহল চেনা অচেনার ভিড়ে
কত না ছিন্ন চরণচিহ্ন ছড়ান সে ঠাঁই ঘিরে
মাল -চেনাচিনি, দর -জানাজানি
কানাকড়ি নিয়ে কত টানাটানি;
হানাহানি করে কেউ নিলো ভরে কেউ গেলো খালি ফিরে
দিবসে থাকে না কথার অন্ত চেনা অচেনার ভিড়ে।
কত কে আসিল কত বা আসিছে কত বা আসিবে হেথা
ওপারের লোক নামলে পসরা ছুটে এপারের ক্রেতা।
শিশির বিমল-প্রভাতের ফল,
শতহাতে সহি পরখের ছল
বিকালবেলায় বিকায় হেলায় সহিয়া নীরব ব্যথা।
হিসাব নাহিরে-এলো আর গেলো কত ক্রেতা বিক্রেতা।
নূতন করিয়া বসা আর ভাঙা পুরানো হাটের মেলা
দিবসরাত্রি নূতন যাত্রি নিত্য নাটের খেলা!
খোলা আছে হাট মুক্ত বাতাশে
বাধা নাই ওগো-যে যায় সে আসে;
কেহ কাঁদে, কেহ গাঁটে করি বাঁধে ঘরে ফিরিবার বেলা।
উদার আকাশে মুক্ত বাতাশে চিরকাল একই খেলা!
আরও পড়ুন –
অন্নপূর্ণা ও ঈশ্বরী পাটনি (কবিতা)- ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর
পরিচয় (কবিতা) – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
হাট (কবিতা) – যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
এখানে আকাশ নীল (কবিতা) – জীবনানন্দ দাশ
সামান্যই প্রার্থনা (কবিতা) – বিজনকৃষ্ণ চৌধুরী
দস্যু -কবলে (গল্প) – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
নতুনদা (গল্প) – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
সিংহের দেশ (গল্প) – বিভূতিভূষন বন্দ্যোপাধ্যায়
দেবতামুড়া ও ডম্বুর (গল্প) – সমরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা
সুভা (ছোটোগল্প) – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বেড়া (ছোটোগল্প) – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়