কন্যারে ফেলিল যথা জলের মাঝারে তথা
দিব্য পুরী সমুদ্র মাঝার ।
অতি মনোহর দেশ নাহি তথা দুঃখ ক্লেশ
সত্য ধর্ম সদা সদাচার ।।
সমুদ্রনৃপতি সুতা পদ্মা নামে গুণযুতা
সিন্ধুতীরে দেখি দিব্যস্থান ।
উপরে পর্বত এক ফল ফুলে অতিরেক
তার পাশে রচিল উদ্যান ।।
নানা পুষ্প মনোহর সুগন্ধি সৌরভতর
নানা ফল বৃক্ষ সুলক্ষণ ।
তাহাতে বিচিত্র টঙ্গি হেমরত্নে নানা রঙ্গি
তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ ।।
পিতৃপুরে ছিল নিশি নানাসুখে খেলি হাসি
যদি হৈল সময় প্রত্যুষ ।
সখীগণ করি সঙ্গে আসিতে উদ্যানে রঙ্গে
সিন্ধুতীরে রহিছে মাঞ্জস ।।
মনেতে কৌতুক বাসি তুরিত গমনে আসি
দেখে চারি সখী চারভিত ।
মধ্যেতে যে কন্যাখানি রূপে অতি রম্ভা জিনি
নিপতিতা চেতন রহিত ।।
দেখিয়া রূপের কলা বিস্মিত হইল বালা
অনুমান করে নিজ চিতে ।
ইন্দ্র শাপে বিদ্যাধরি কিবা স্বর্গভ্রষ্ট করি
অচৈতন্য পড়িছে ভূমিতে । ।
বেকত দেখিয়া আঁখি তেন স-বসন সাক্ষী
বেথানিত হৈছে কেশ বেশ ।
বুঝি সমুদ্রের নাও ভাঙ্গিল প্রবল বাও
মোহিত পাইয়া সিন্ধু-ক্লেশ । ।
চিত্রের পোতলি সমা নিপতিত মনোরমা
কিঞ্চিৎ আছয় মাত্র শ্বাস ।
অতি স্নেহ ভাবি মনে বলে পদ্মা ততক্ষণে
বিধি মোরে না কর নৈরাশ । ।
পিতার পুণ্যের ফলে মোহর ভাগ্যের বলে
বাহুরক কন্যার জীবন ।
চিকিৎসিমু প্রাণপণ কৃপা কর নিরঞ্জন
দুখিনীরে করিয়া স্মরণ । ।
সখী সবে আজ্ঞা দিল উদ্যানের মাঝে নিল
পঞ্চজনে বসনে ঢাকিয়া ।
অগ্নি জ্বালি ছেকে গাও কেহ শিরে কেহ পাও
তন্ত্রে মন্ত্রে মহৌষধি দিয়া । ।
দণ্ড চারি এই মতে বহু যত্নে চিকিৎসিতে
পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন ।
শ্রীযুত মাগন গুণী মোহন্ত আরতি শুনি
হীন আলাওল সুরচন । ।